মানবদেহের জানা অজানা বিস্ময়কর তথ্য

মানবদেহের জানা অজানা বিস্ময়কর তথ্য।মানব দেহ অত্যন্ত জটিল।এই পৃথিবীর সবচেয়ে নিপুন ও জটিল সৃষ্টি হল মানব দেহ। মানবদেহ সম্পর্কে কতোটুকু জানি আমরা? আজ ও বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়তই গবেষনা করছে মানব দেহ নিয়ে, ফলে অনেক অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত সম্পূর্ন মানব দেহ নিয়ে কোন বিজ্ঞানীই পূর্নাঙ্গ তথ্য বের করতে সক্ষম হয়নি। মানবদেহের জানা অজানা যেটুকু তথ্য বেরিয়েছে তাতে পুরো বিশ্ব অবাক!এই মানবদেহ নিয়ে এমন সব মজার তথ্য আছে যা এখনো অনেকরই অজানা। মানব দেহ নিয়ে যেমন জল্পনা কল্পনার শেষ নেই ঠিক মানবদেহের জানা অজানা তথ্যের ও শেষ নেই। আজ আমরা মানবদেহের বিভিন্ন অবাক করা তথ্য জানবো!চলুন শুরু করা যাক, মানবদেহের জানা অজানা বিস্ময়কর তথ্য

মানবদেহের জানা অজানা বিস্ময়কর তথ্য

১। একজন মানুষের রক্তের পরিমাণ তার শরীরের মোট ওজনের ১৩ ভাগের এক ভাগ।

২। একজন শিশুর জন্মের সময় মোট হাড় থাকে ৩৫০ টি।

৩। সাত মাস বয়স পর্যন্ত একটি শিশু  একই সাথে শ্বাস গ্রহণ ও খাওয়া, দুটোই সমানভাবে করতে পারে।

৪। একজন স্বাভাবিক মানুষ দিনে তেইশ হাজার চল্লিশ বার শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ে থাকে।

৫। সাধারণত একজন মানুষের শরীরে চামড়ার পরিমাণ হচ্ছে ২০ বর্গফুট।

৬। মানুষের মাথার খুলি ২৯ টি ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হাড় দিয়ে গঠিত।

৭। সাধারনত একজন মানুষের চামড়ার ওপর রয়েছে প্রায় ১ কোটি লোমকূপ।

৮। সাধারনত মানুষের শরীরে ৬৫০ টি পেশী আছে। কোন কোন কাজে প্রায় ২০০ টি পেশী সক্রিয় হয়। মুখমন্ডলে ৩০ টির বেশী পেশী আছে। হাসতে গেলে কমপক্ষে ১৫ টির বেশী পেশী সক্রিয় হয়।

৯। একটি সুস্থ হৃদপিণ্ড সারা জীবনে গড়ে প্রায় ১৮২ মিলিয়ন লিটার রক্ত পাম্প করে।

১০। আমাদের দেহে অক্সিজেন সরবরাহকারী লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ প্রায় ২৫০০ কোটি এবং এরা ৪ মাস বাঁচে।

১১। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে একজন মানুষ গড়ে ১৫০ ট্রিলিয়ন টুকরো টুকরো তথ্য মনে করতে পারে।

১২। আমাদের রোগ প্রতিরোধকারী শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা প্রায় ২৫০ কোটি এবং এরা মাত্র ১২ ঘন্টা বাঁচে।

১৩। একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০০০ বার শ্বাস নেয়।

১৪। আমাদের মস্তিষ্ক প্রায় ১০,০০০ টি বিভিন্ন গন্ধ সনাক্ত করতে ও মনে রাখতে পারে।

১৫। একজন মানুষের মস্তিষ্কের স্মরণ রাখার ক্ষমতা প্রায় একটি হার্ডডিস্কের ৪ টেরাবাইটের সমান।

১৬। মানুষ যা স্বপ্নে দেখে তার প্রায় ৯০% ই ঘুম থেকে উঠে ভুলে যায়।

১৭। শরীরে একস্থান থেকে শুরু করে সমগ্র শরীর ঘুরে ঐ স্থানে ফিরে আসতে একটি রক্ত কণিকা প্রায় ১,০০,০০০ কিমি পথ অতিক্রম করে অর্থাৎ ২.৫ বার পৃথিবী অতিক্রম করতে পারে!

১৮। সকালবেলার  তুলনায় সন্ধ্যায় প্রত্যেক মানুষের উচ্চতা ১ সেন্টিমিটার করে কম থাকে।

১৯। পুরুষের হৃদপিণ্ডের তুলনায় নারীর হৃদপিণ্ড দ্রুত সংকুচিত প্রসারিত হয়ে থাকে।

২০। একজন মানুষের মাথায় প্রতিদিন প্রায় ১০০ টি করে নতুন চুল গজায়।

২১। আমাদের দেহে প্রায় ২ কেজি ওজনের সমপরিমাণ ব্যাকটেরিয়া থাকে।

২২। মানবদেহের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশি হল জিহবা।

২৩। জন্মের সময় একজন মানুষের দেহে প্রায় ১৪ বিলিয়ন কোষ থাকে। এই সংখ্যা কখনো বাড়ে না।

২৪। সাধারনত একজন মানুষের স্নায়ুতন্ত্র এত লম্বা যে তা দিয়ে পৃথিবীকে প্রায় ৭ বার পেঁচানো যাবে।

২৫। সাধারনত বাঁহাতি মানুষের তুলনায় ডানহাতি মানুষ গড়ে ৯ বছর বেশি বেঁচে থাকে।

২৬। গর্ভধারণের তিন মাসের মাথায় একটি মানব ভ্রূণ তার নিজস্ব ফিঙ্গারপ্রিন্ট ধারন করে।

২৭। মানবদেহে ও মনে অনুভূতি আসলে তা মস্তিষ্কে পৌঁছতে ০.১ সেকেন্ড সময় লাগে।

২৮। একজন মানুষের ঘুমিয়ে পড়তে প্রায় ৭ মিনিট সময় লাগে।

২৯। মানবদেহে কোন অনুভূতি স্নায়ুতন্ত্রের মধ্য দিয়ে ঘন্টায় প্রায় ২০০ মাইল বেগে প্রবাহিত হয়।

৩০। মানুষের পায়ের নখের চেয়ে হাতের নখ প্রায় চারগুণ দ্রুত বাড়ে।

৩১। মানবদেহে ডান ফুসফুস বাম ফুসফুসের চেয়ে বেশি বাতাস গ্রহণ করতে পারে।

৩২। মানবদেহের সব শিরাকে পাশাপাশি সাজালে দেড় একর জমির প্রয়োজন হবে।

৩৩। ২৫ বছর বয়সের পর থেকে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ করে কোষ কমতে থাকে।

৩৪। একজন মানুষ সারা জীবনে প্রায় ৪০ হাজার লিটার মূত্র ত্যাগ করে।

৩৫। আমাদের শরীরে রক্তবাহি শিরা আছে প্রায় ১৬১,০০০ কিমি। যা পৃথিবীকে চার বার প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম।

৩৬। এবার আপনি এই বাক্যটি পড়তে পড়তেই আপনার দেহের প্রায় ৫০ হাজার কোষ ধ্বংস হয়ে নতুন কোষ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে গেছে!

৩৭। একটি চার বছরের বাচ্চা সারাদিনে গড়ে ৪৫০ টি প্রশ্ন করে থাকে।এটা কি? কেন হলো? কীভাবে হলো? ইত্যাদি ইত্যাদি।

৩৮। মানবদেহে প্রায় ৭০০ এনজাইম সক্রিয় আছে।

৩৯। প্রতি মিনিটে আমরা গড়ে ১৫ বার চোখের পাতা ব্লিংক করি। মোট ১৫,০০০ বার দিনে।

৪০। ডানহাতি মানুষ বেশিরভাগ খাবার মুখের ডান পাশে চিবিয়ে থাকে, বাঁহাতি মানুষ বেশিরভাগ সময় খাবার চিবায় মুখের বাম পাশে।

৪১। মানুষের মস্তিষ্ক প্রতি মিনিটে গড়ে ১,০০০ শব্দ পর্যন্ত পড়তে পারেন।

৪২। আপনার শরীরের ওজনের ১% সমান পানি যখন আপনার দেহ থেকে বেরিয়ে যায়, তখন আপনার পানির তৃষ্ণা বোধ হয়,৫% পানি বের হয়ে গেলে আপনি অজ্ঞান হয়ে যাবেন, আর ১০% পানি বের হলে ডিহাইড্রেশনের কবলে পরে মারা যেতে পারেন।

৪৩। মানুষের মুখেই কেবলমাত্র ৪০ হাজার ব্যাকটেরিয়া অবস্থান করে।

৪৪। কোনও কোনও ব্যক্তির মুখে বিদ্যমান ব্যাকটিরিয়ার সংখ্যা পৃথিবীর মোট লোক সংখ্যার সমান বা তারও বেশি!

৪৫। জন্মের সময় একটি শিশুর দেহে প্রায় ৩৫০ টির কাছাকাছি হাড় থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক হতে হতে সে সংখ্যা নেমে দাঁড়ায় ২০৬তে।

৪৬। হাসির সময় একজন মানুষ ১৭ টি পেশির ব্যবহার করে, আর ভ্রু কুঁচকানোর সময় ব্যবহার করে ৪৩ টি পেশি।

৪৭। গড়ে একজন মানুষ ২৪ ঘণ্টায় ৪৮০০ শব্দের ব্যবহার করে থাকে।

৪৮। মাত্র একদিনে আমাদের রক্ত ​​১৯ ৩১২ কিলোমিটার দূরত্ব দৌড়ায় মানবদেহে। 

৪৯। আমাদের ত্বকের প্রতি ১ বর্গ সেন্টিমিটারে প্রায় শতাধিক ব্যথা সংবেদক রয়েছে।

৫০। আমাদের হৃদপিণ্ড বছরে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন বার বিট দেয়।

৫১। আমাদের শরীরে যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম জমা থাকে, তার ৯৯% ই থাকে দাঁতে।

৫২। একটি বইয়ের এক পাতা পড়তে যে সময় লাগে, সে সময়ের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায় প্রায় ৭০ টি কোষ,৫০ বছরের পর থেকে মানুষের মস্তিষ্ক ছোট হয়ে যেতে থাকে।

৫৩। মানুষের জিভ দেখে অনেক কিছু বুঝা যায়। জিভের নমুনা একেবারে অনন্য।কারো সাথে কারো কখনও মিলবে না।

৫৪। মানুষের চোখ এক কোটি পর্যন্ত নানা রংয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেবা বুঝতে পারে, কিন্তু আমাদের মস্তিষ্ক এর সবগুলো মনে রাখতে পারে না।

৫৫। আমাদের কান প্রতি বছর এক মিলিমিটারের এক চতুর্থাংশ পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

৫৬। ছেলেদের জিহ্বার পৃষ্ঠে মেয়েদের চেয়ে স্বাদের কুঁড়ি(টেষ্ট বাট) কম পরিমানে থাকে।

৫৭। একজন মানুষ তার জীবনে গড়পড়তায় প্রায় ৩৫ টন খাদ্যগ্রহণ করে।

৫৮। একজন মানুষ প্রতিদিন প্রায় ২০০০০ বার শ্বাস নিয়ে থাকে।

৫৯। আমাদের হাঁচির গতি ঘন্টায় প্রায় ১৬০ কিমি।

৬০। আমাদের মস্তিষ্কে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ১০০০০০ রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে।

৬১। হৃদস্পন্দন প্রতিদিন প্রায় ৭,৫৭০ লিটার রক্ত পাম্প করে দেহকে সচল রাখে।

৬২। মানবদেহের মস্তিস্কে একশত বিলিয়ন ব্রেইন সেল আছে; যা দেহের সব কর্মকন্ডের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে।

৬৩। আমাদের হাসিতে মুখের ১৭টি পেশিকে ট্রিগার করে। অন্যদিকে কান্নায় ৪৩ টি পেশি সক্রিয় হয়ে উঠে।

৬৪। যখন আপনি লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছেন তখন আপনার গালের সাথে সাথে পাকস্থলিও লাল বর্ণ ধারণ করে।

৬৫। আমাদের দেহে প্রতি মিনিটে প্রয়োজন হয় ২৫০ মিলি লিটার অক্সিজেন। অক্সিজেন ধারন করার জন্য আমাদের ফুসফুসে আছে প্রায় তিরিশ কোটি এয়ার স্যাকস্ । যা আয়তনে ৮০-৯০ স্কোয়ার মিটার তথা একটি টেনিস কোর্টের অর্ধেকের সমান।

কিছু প্রশ্ন 

মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা কত?

 ৯৮.৬° ফারেনহাইট বা ৩৭° সেলসিয়াস। 

মানবদেহের সর্ববৃহৎ অঙ্গ কোনটি?

মানবদেহের সর্ববৃহৎ অঙ্গ ত্বক। 

মানবদেহের সর্ববৃহৎ বা বৃহত্তম গ্রন্থি কোনটি?

মানবদেহের সর্ববৃহৎ বা বৃহত্তম গ্রন্থি যকৃত। 

এই পোস্ট এ আমরা মানবদেহের জানা অজানা বিস্ময়কর তথ্য শেয়ার করেছি। ভাল লাগলে আপনার বন্ধুকে মেনশন করে জানিয়ে দিন! পরবর্তী পোস্ট গুলো পেতে লাইক কমেন্ট দিয়ে পাশে থাকুন।আর মানবদেহে নিয়ে  নতুন কোন তথ্য থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন,আমরা সেই তথ্য ও আপনার নাম সহ পোস্টটি আপডেট করব।

Leave a Comment