মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান:বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল ঢাকা মহানগরী ও তৎসংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে ও পরিবেশ উন্নয়নে কী ভূমিকা রাখবে?বা মেট্রোরেলের সুবিধা

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, এমআরটি লাইন-৬ বা বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের প্রতিঘণ্টায় যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা ৬০ হাজার এবং দিনে ৫ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। মোট ৬টি কোচ সম্বলিত প্রতিটি একমুখী মেট্রো ট্রেন প্রতিবারে ৩৮ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে।এর মধ্যে ১৬ টি স্টেশনে থেমে সর্বোচ্চ ২,৩০৮ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। সাধারনত মেট্রোরেলে অল্প সময়ে অধিক সংখ্যায় যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হয়। যা অন্য যানবাহনে সম্ভব নয়।এতে ছোট ছোট যানবাহনের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে। তাতে জীবাশ্ম ও তরল জ্বালানীর ব্যবহার বহুলাংশে কমে যাবে। ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প ফলে ঢাকা মহানগরীর যাতায়াত ব্যবস্থায় ভিন্ন মাত্রা ও গতি যোগ হবে।সবচেয়ে বড় বিষয় মহানগরবাসীর কর্মঘন্টা সাশ্রয় হবে ও যানজট বহুলাংশে হ্রাস পাবে। দীর্ঘ যানজট এবং এর ফলে যে ক্ষতি হচ্ছে তা সাশ্রয় হবে। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, MRT Line-6 চালু হওয়ার পর মেট্রোরেল বাংলাদেশ  পরিচালনাকালে দৈনিক Travel Time Cost বাবদ প্রায় ৮ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা এবং Vehicle Operation Cost বাবদ প্রায় ১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা সাশ্রয় হবে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সাশ্রয়কৃত কর্মঘন্টা ব্যবহার করা যাবে।

মেট্রোরেল সম্পূর্ণ বিদ্যুৎতে চলাচল করবে। ফলে মেট্রোরেলে কোনো ধরণের জীবাশ্ম ও তরল জ্বালানী ব্যবহৃত হবে না। তাতে বায়ু দূষণ হওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না । মেট্রোরেলের Railway Track এর নিচে Mass Spring System (MSS) থাকবে। Continuous Welded Rail (CWR) ব্যবহার করা হবে। উড়াল মেট্রোরেলের ভায়াডাক্টের উভয় পার্শ্বে শব্দ প্রতিবন্ধক দেয়াল থাকবে। ফলশ্রুতিতে মেট্রোরেলে শব্দ ও কম্পন দূষণ মাত্রা মানদন্ড সীমার অনেক নিচে থাকবে। 

সার্বিকভাবে বলা যায় মেট্রোরেল পরিবেশ দূষণে নেতিবাচক কোন প্রভাব ফেলবে না বরং পরিবেশ উন্নয়নে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুনঃ ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প

মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন/ মেট্রোরেল নিয়ে প্রশ্ন

এক নজরে মেট্রোরেল প্রকল্প / মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

উদ্দেশ্য : ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্প, ঢাকা মহানগরীর ভয়াবহ যানজট নিরসনে ও পরিবেশ উন্নয়নে নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, দ্রুতগামী, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, সময়-সাশ্রয়ী, বিদ্যুৎ চালিত, দূরনিয়ন্ত্রিত ও পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা।

গুরুত্ব :Fast Track

মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য : ২১.২৬ কিলোমিটার

অবকাঠামোর ধরণ : উড়াল

মেট্রোরেল কোথায় থেকে কোথায় যাবে : উত্তরা ৩য় পর্ব – পল্লবী – রোকেয়া সরণির পশ্চিম পার্শ্ব দিয়ে খামারবাড়ী হয়ে ফার্মগেট – হোটেল সোনারগাঁও – শাহবাগ – টিএসসি – দোয়েল চত্ত্বর – তোপখানা রোড – বাংলাদেশ ব্যাংক – জসিম উদ্দিন রোডের প্রথম অংশ হয়ে দক্ষিণ দিক দিয়ে সার্কুলার রোড সংলগ্ন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা।

মেট্রোরেল স্টেশন কয়টি /মেট্রোরেলে স্টেশন সংখ্যা : ১৭ টি

স্টেশনসমূহ : উত্তরা উত্তর – উত্তরা সেন্টার – উত্তরা দক্ষিণ –  পল্লবী –  মিরপুর ১১ – মিরপুর ১০ – কাজীপাড়া – শেওড়াপাড়া – আগারগাঁও – বিজয় সরণি – ফার্মগেট – কারওয়ান বাজার – শাহবাগ – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় –  বাংলাদেশ সচিবালয় – মতিঝিল

মেট্রো ট্রেনের সংখ্যা : ৬ কোচ বিশিষ্ট ২৪ সেট। তবে ভবিষ্যতে ৮ কোচে উন্নীত করা যাবে।

আরও পড়ুনঃ মেট্রোরেলের সুবিধা

মেট্রোরেলের ধারণ ক্ষমতা (২০২২) : ঘন্টায় ৬০ হাজার ও দৈনিক ৫ লক্ষ

কোচের যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা : ক) মাঝের ৪টি কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৯০ জন

খ) ট্রেইলার কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৭৪ জন

প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে সর্বোচ্চ যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা : ২৩০৮ জন

মেট্রো ট্রেনের ফ্রিকোয়েন্সি : ৩ মিনিট ৩০ সেকেন্ড (পিক আওয়ার)

মেট্রো ট্রেনের পরিচালন ব্যবস্থা : Communication Based Train Control (CBTC) System

সর্বোচ্চ পরিকল্পিত গতি : ১০০ কিলোমিটার/ঘন্টা

মেট্রো ট্র্যাকের ধরণ : Dual Continuous Welded Rail

গেজ : স্ট্যান্ডার্ড গেজ (১৪৩৫ মিলিমিটার)

যাতায়াতের সময় : ১৬টি স্টেশনে থেমে ৩৮ মিনিট (উত্তরা থেকে মতিঝিল)

নির্মাণ কাজের উদ্বোধন : ২৬ জুন ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ

তথ্যসূত্র :

উইকিপিডিয়া 

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)

Leave a Comment